লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ। হঠাৎ করে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চরঞ্চলের কৃষকরা। বিশেষ করে যেসব কৃষক বর্গা চাষি ও ঋণগ্রস্ত তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে উজানে ভারি বৃষ্টির ফলে হঠাৎ তিস্তার পানি বৃদ্ধি পায়। এতে চরের কৃষকদের চাষ করা পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মরিচ, ভুট্টা, লাউ, কুমড়া, তরমুজ, শসা ও মসলা জাতীয় অনেক ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চর এলাকার কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা ব্যারাজের বেশির ভাগ গেট খুলে দিয়ে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলেরা মাছ ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিন্তু পানি বৃদ্ধির ফলে কৃষকদের তলিয়ে যাওয়া ফসলগুলো নৌকায় করে এনে রোদে শুকাচ্ছেন তারা।
এ সময় চরাঞ্চলের কৃষক গোলাম রব্বানি বলেন, ‘আমার তিন বিঘা জমির পেঁয়াজ পানিতে তলিয়ে গেছে। নৌকায় করে গিয়ে সেই পেঁয়াজ তুলে এনে রোদে শুকানো হচ্ছে। হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার এই ক্ষতি হয়েছে।
আমি একজন গরিব মানুষ। তাই অন্যের জমি বর্গা ও ঋণ করে চাষাবাদ করেছি। সেই ফষলও পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমি কী করব? পরিবার নিয়ে কী খাব? আর ঋণ শোধ করব কেমন করে?
একই কথা বলেন আরেক কৃষক দেলোয়ার হোসেন, আমার পাঁচ বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন আমি কী করব? পুরো পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
এ বিষয়ে তিস্তা ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাফউদ্দৌলা বলেন, ‘হঠাৎকরে কয়েক দিন তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পানি এখনো বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু অসময়ে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে শুনেছি।
হাতীবান্ধা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, তিস্তার পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় চর অঞ্চলের অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। মাঠকর্মীদের খোঁজখবর নিয়ে তালিকা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Related